১৪-১৬ জুন ২০২৫ তারিখে ম্যাসল্যাবে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হলো আমার বিজ্ঞান পাঠ-পর্ব ২। তিন দিনব্যাপী এই আয়োজনে ৬-১২ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ছিল হাতে-কলমে শেখা, কৌতূহল আর নতুন কিছু জানার আনন্দ।

প্রথম দিনে শিশুরা পানি, চিনি আর একটুকরো আলু দিয়ে অভিশ্রবণ (Osmosis) প্রক্রিয়া শিখেছে । চিনি-পানি মিশ্রণে আলু দিয়ে দেখেছে কেমন করে আলুর ভেতর পানি জমে যায়, কারণ পানির কণাগুলো ঘনত্ব সমান করতে চায়।

এরপর তারা প্রথমবারের মতো হাতে ধরেছে মাইক্রোস্কোপ, আর দেখে নিয়েছে হৃদপিণ্ডের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কোষ। অনেকের চোখে বিস্ময়, মুখে প্রশ্ন

“এগুলো কি সত্যিই আমাদের শরীরে আছে?”

এই প্রশ্ন করাটাই তো বিজ্ঞানচর্চার শুরু।

দ্বিতীয় দিনে শিশুরা শিখেছে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া। এসকরবিক অ্যাসিড ও পটাশিয়াম পারম্যাংগানেট দিয়ে রঙ বদলের রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া দেখে তারা জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার রহস্য বুঝেছে। এই রঙ পরিবর্তনের মাধ্যমে শিখেছে কিভাবে এক পদার্থ অন্যকে ইলেকট্রন দেয় বা নেয়।

এরপর তারা নিজের হাতে তৈরি করেছে ব্যারোমিটার। পেপার কাপ ও স্টিক দিয়ে বানানো এই যন্ত্রে মুগ্ধ হয়ে দেখেছে, বায়ুচাপ বাড়লে স্টিক ওপরে ওঠে আর কমলে নিচে নামে। অদৃশ্য বাতাসের এমন খেলাও যে বোঝা যায়, সেটাই ছিল তাদের নতুন শিখন!

১৬ জুন ছিল আয়োজনের শেষ দিন। এইদিন গতি, চাপ আর প্রতিক্রিয়ার আনন্দে শিশুরা তৈরি করে বেলুনচালিত গাড়ি, আর শেখে যে বাতাস শুধু চারপাশে থাকে না, এটি জায়গা নেয়, চাপ তৈরি করে এবং জিনিসপত্রকে সরাতেও পারে। বেলুনের ভেতরের বাতাস যখন বেরিয়ে আসে, তখন সেটিই গাড়িটিকে ঠেলে সামনে নিয়ে যায় এভাবেই তারা বুঝেছে air pressure এবং propulsion এর কাজ।

দিনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল ‘এলিফ্যান্ট টুথপেস্ট’ এক্সপেরিমেন্ট। বিশেষ কিছু উপাদান মিশিয়ে তারা প্রত্যক্ষ করেছে একটি মজার, ফেনায় ভরা রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া। এই পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুরা শিখেছে বিভিন্ন জিনিস একসাথে মেশালে কীভাবে দ্রুত প্রতিক্রিয়া হয়, কীভাবে গ্যাস তৈরি হয়ে ফেনা আকারে ছড়িয়ে পড়ে, এবং প্রতিক্রিয়ার সময় কীভাবে পরিবর্তন ঘটে।

এই আয়োজনের প্রতিটি ধাপেই ছিল প্রশ্ন, পর্যবেক্ষণ আর উত্তর খুঁজে পাওয়ার আনন্দ। আমরা বিশ্বাস করি বিজ্ঞান সবচেয়ে মজার তখনই, যখন সেটা শেখা যায় হাতে-কলমে, আনন্দে